প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১:২৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

এ সম্পর্কিত আরও খবর

আড়িয়াল বিল: পাখিরা যেখানে প্রকৃতির শিল্পী

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১:২৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

👁 12 views

আড়িয়াল বিল: পাখিরা যেখানে প্রকৃতির শিল্পী


রুবেল ইসলাম তাহমিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | সময় বাংলার |

বর্ষার পাশাপাশি শীতের শুরু থেকে বাড়তে শুরু করে আড়িয়ল বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বিলের প্রধান চাষাবাদে ভরে থাকে বিল। কুমড়ার খেত, বিস্তীর্ণ সরিষার চাষ, এখানে ওখানে নতুন ধানের রোপণ, আর খালে প্রবাহিত পানিতে নৌকার বিচরণ মন কাড়ে সবার। পাশাপাশি এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় অতিথি পাখির আনাগোণা। দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের পাখির সাথে অতিথি পাখির বিচরণ আলাদা এক সৌন্দর্য যুক্ত করেছে এই আড়িয়ল বিলে। এ যেন পাখিদের এক অনন্য মিলনমেলা

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় পাখিদের বিচরণ


 মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলে ঘুরে দেখা যায় অতিথি পাখিরা এসে ভীর করেছে। হাজার হাজার মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক উড়ে আসছে। বিভিন্ন জলাশয় ও সবজি খেতে বিচরণ করছে এসব পাখির দল।

খাদ্যের সন্ধানে সাদা বক


পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদীর মাঝখানে মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি অবভূমি এই আড়িয়ল বিল। দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল। বর্ষায় পানিতে টইটুম্বুর থাকলেও আড়িয়ল বিলের বেশিরভাগ অংশই শুষ্ক ঋতুতেও আর্দ্র থাকে। কোথাও কোথাও, বিশেষ করে খালগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ পানির সঞ্চারণ দেখা যায়। তবে শীতকালে একটি বিস্তীর্ণ শস্য ক্ষেতে পরিণত হয়।আড়িয়ল বিল। আর শুরু হয় পাখির আনাগোণা।পাতিহাঁস, সাদা বক, মদনটাক, কানি বক, পানকৌড়ি, শামুকখোল, মাছরাঙা এসব দেশি পাখির পাশাপাশি বালিহাঁস, সাদা গাঙচিলসহ নাম না জানা অসংখ্য পরিযায়ী পাখির আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে আড়িয়ল বিল।

আড়িয়াল বিলের প্রকৃতি


স্থানীয়রা বলছেন, দেশে শীত বাড়ার সাথে সাথে পরিযায়ী পাখির আগমন বেড়েছে। এর মধ্যে শামুকখোল, সাদা বক, বালি হাঁসের পরিমাণ বেশি। এরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে। ভোর থেকেই খাদ্যের সন্ধানে পাখিদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। সন্ধ্যার আগেই অতিথি পাখিরা আহার শেষে ঝাঁক বেঁধে উড়ে যায়। আশ্রয় নেয় বিলের উঁচু গাছে। খুব কাছ থেকে এসব পাখির বিচরণ উপভোগ করতে পেরে আনন্দ পান এই মানুষেরা। বিস্তীর্ণ আড়িয়ল বিলের কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জমিতে পাখিরা দল বেঁধে খাদ্যের সন্ধান করছে। অল্প পানিতে ছোট ছোট মাছ ও শামুক ধরে খাচ্ছে। উপজেলার বীরতারা, পাটাভোগ, পশ্চিম নওপাড়া, আটপাড়া, গাদিঘাট এলাকার বিভিন্ন জলাশয় ও ধানের জমিতে অতিথি পাখির বিচরণ চোখে পড়ে। খেতে কাজে ব্যস্ত চাষীদের মতো যেন পাখিগুলোও দিনভর ব্যস্ত খাদ্য সংগ্রহে।সাইবেরিয়া অঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে পানকৌড়ি, বালিহাঁসসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখিরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে চলে আসে।

পরিযায়ী পাখির দল শীতপ্রধান দেশ থেকে আবাসস্থল অনুপযোগী হওয়া, খাদ্যের অভাব ও প্রচণ্ড শীতের কবল থেকে নিজেদের বাঁচাতে বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাতিশীতোষ্ণ অংশে উড়ে আসে। বিশেষ করে আফ্রিকা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযায়ী পাখির দল আসতে শুরু করে। এরা ফসলের খেত, জলাশয়ে ঘুরে কীটপতঙ্গ, মাছ খেয়ে জীবন বাঁচায়।

ছোট খাল গুলো বিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে


প্রকৃতি গবেষকরা বলছেন, অতিথি পাখিসহ সকল প্রজাতির দেশীয় পাখি দেশের সম্পদ। এরা প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই পাখি রক্ষায় সচেতনতার পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগ করে প্রকৃতিকে টিকিয়ে রাখা উচিত।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments