রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, জনগণের সত্যিকারের রায় প্রতিষ্ঠা করতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। অসুস্থতার কারণে যুক্তরাজ্যে থাকলেও দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি সবসময় আপনাদের পাশে আছি। গণতন্ত্রের জন্য আপনারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা জাতি চিরকাল মনে রাখবে।”
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার মুক্তির জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন আপনারা। অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সোয়া লাখের বেশি মিথ্যা মামলার বেড়াজালে আটকে এখনও ন্যায়বিচারের জন্য আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন।”
দলীয় নেতাকর্মীদের আরও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দীর্ঘ ছয় বছর পর ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ঘটেছে, এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। একইসঙ্গে, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।”
তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, “আমার অনুপস্থিতিতে দলকে সুসংগঠিত রেখেছে তারেক রহমান। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো, এতদিনের সংগ্রাম বৃথা না যেতে দেওয়া।”
“ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়”—এই দর্শনকে সামনে রেখে খালেদা জিয়া দলের মধ্যে সব ধরনের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করেন, “ফ্যাসিস্ট শক্তি এখনো জুলাই আন্দোলনের অর্জনকে ধ্বংস করতে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের এসব চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, আমাদের লক্ষ্য ভাতৃত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের দেশকে বাসযোগ্য, উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় রূপ দিতে হবে।”
খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য বিএনপির পরবর্তী রাজনীতি ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।