গাজী আরমানঃ- বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলায় ২৮ সেনা নিহত, জিম্মি হওয়া যাত্রীরা মুক্ত
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) কর্তৃক জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি হাইজ্যাক করার পর সব জিম্মি যাত্রী মুক্ত করা হয়েছে। তবে এই অভিযানে ২৮ জন সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। গত মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত বোলান অঞ্চলে এই হামলা ঘটে, যেখানে ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রী জিম্মি হন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্সের (আইএসপিআর) ডিরেক্টর জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী আজ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, সন্ত্রাসীদের কবল থেকে সব যাত্রীকে মুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অভিযানে ৩৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এছাড়া, চার সদস্যের ফ্রন্টিয়ার কর্পস বাহিনীও প্রাণ হারিয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী বলেন, ‘‘সন্ত্রাসীরা ১১ মার্চ বোলানে রেললাইন লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে জাফর এক্সপ্রেস থামিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে।’’ তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুসহ যাত্রীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। নিরাপত্তা বাহিনীর স্নাইপাররা আত্মঘাতী হামলাকারীদের নিষ্ক্রিয় করে।
ডিজি আইএসপিআর আরও জানান, হামলাকারীরা আফগানিস্তানে তাদের সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানায়, উদ্ধার অভিযান প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ১৯০ জন যাত্রী মুক্ত করা হলেও কিছু সন্ত্রাসী এখনও সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। রেলওয়ে মন্ত্রী বিলাল আজহার কায়ানি জানিয়েছেন, অভিযান সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে চালানো হচ্ছে যাতে প্রাণহানি কম হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই হামলা পাকিস্তানের শান্তির সংকল্পকে নড়াতে পারবে না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি প্রাদেশিক পরিষদে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালায়, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কঠোর শাস্তি দেবে।’’