মেহযাদ মুনিয়াঃ- মাগুরায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা সম্প্রতি পুরো দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার পর, তার পরিবারের প্রতি শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে স্থানীয় জনগণ আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাগুরা পৌর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে, যেখানে প্রথমে আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়, পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত ওই বাড়িতে আগুন জ্বলছিল এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এর আগে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে, সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে শিশুটির মরদেহ মাগুরা স্টেডিয়ামে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পরেই, স্থানীয় জনগণ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে আসামিদের বাড়িতে আক্রমণ করে এবং বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। রাত ৮টা ২০ মিনিটে শিশুটির গ্রামের কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয় এবং সেখানেই তাকে দাফন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
এর আগে বেলা একটায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। দুবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি।
পুলিশ ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। গত বৃহস্পতিবার অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই আজ শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় গত শনিবার শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তার মা। মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মাগুরার এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনা চলছে। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ।