মুন্সীগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কাটার ভিডিও ধারনে, বি এন পির নেতাকে পিটিয়ে আহত ।
রুবেল ইসলাম তাহমিদ, (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি ।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রামকৃষ্ণদি গ্রামে ফসলি জমির অবৈধ ভাবে মাটি কাটার ভিডিও ধারণ করায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপনকে (৪০) পিটিয়েছে আহত করেছে মাটি কাটা চক্রের সদস্যরা। গত কাল শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় নেতাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন,উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের রামকৃষ্ণদি গ্রামের ইকবাল ও জহির,সোহরাব, নাছির, মো. সামসুদ্দিন খাঁন (খোকন) সহ কয়েকটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত ফসলি জমি থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কাটছে। এতে বেশ ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। শনিবার রাতে রামকৃষ্ণদি গ্রামে রিপন মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করলে মাটি কাটা চক্রের লোকজন তাকে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে আহত কে উদ্ধার করতে গেলে মাটি কাটা চক্রের সদস্যরা পুলিশ সদস্য কে ধাক্কা দিয়ে পালনোর চেষ্ঠা করে এতে আহত হয় ৩পুলিশ সদস্য। পরে রিপনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকায় প্রেরন করেন।
অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, রামকৃষ্ণদি গ্রামে আমি ও আমার ভাই মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত না। শনিবার রাতে রিপনের উপরে যে হামলা হয়েছে তার সাথেও আমরা জড়িত না। মারধরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। ঘটনার সময় আমি খুলনা ছিলাম। লতব্দী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সামসুদ্দিন খাঁন (খোকন) বলেন, কালকে (শনিবার) রাতে রামকৃষ্ণদি চকে যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। আমার দাঁতে ব্যাথার কারণে বাসায় ছিলাম। যে রিপনকে এলাকাবাসী মারধর করছে সে গতবারও মাটি ব্যবসায়ীদের থেকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা নিছে। এবারও চাঁদা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পায়তারা করছে। তার আত্মীয়স্বজনরা মাটি ব্যবসা করছে সেগুলো বন্ধ না করে রামকৃষ্ণদি চকে এসে ফেসবুকে লাইভ করছে, সে কারণেই তাকে মারধর করছে। আরেকটি বিষয় রিপন কি থানার পুলিশ, না ওসি? সে কি মাটি কাটা বন্ধ করতে আসছে না চাঁদা নিতে আসছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন বলেন, এসপি স্যারের নির্দেশে আমি কালকে (শনিবার) রাতে মাটি কাটা হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য গিয়েছি এবং মাটি কাটার ভিডিও করে এসপি স্যারকে পাঠিয়েছি। মাটিকাটার ভিডিও করার কারণেই আমাকে এবং ওসি স্যারের বডিগার্ড সহ তিন পুলিশ সদস্যকে জহিরুল ইসলাম (৩৩), যুবলীগ নেতা নাছির (৩২), শান্ত (৪২) বাদশা (৩৮),রুবেল (২৮), উজ্জ্বল (৩৪), সজিব (২৭), সম্রাট (২৮) সহ মাটি কাটা চক্রের সদস্যরা আমাদের মারধর করেছে। আমি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সিরাজদিখান থানায় মামলা করতে এসেছি। তিনি আরো বলেন, গতবার মাটিকাটা মৌসুমে আমি জেলে, আমি কোন চাঁদা নেইনি, আর চাঁদার সাথে আমি কোন জড়িত না। আমার এলাকায় এবং আমার আত্মীয়স্বজনরা যদি মাটি কাটার সাথে জড়িত থাকে এর সব দায়ভার আমার। সহকারি পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) আ. ন. ম ইমরান খান জানান, ওই গ্রামে অবৈধ মাটি কাটা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করে আসছিলো। ওই রাতে একটি চক্র মাটি কাটতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় পুলিশ। পরে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় স্বেচ্চাসেবক দলের নেতাকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।