শহীদ মাহমুদুল হাসান মাহদী ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে রাজধানী ঢাকার উত্তরায় পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে শহীদ হন। তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল তরুণ, কুরআনের হাফেজ, মসজিদের ইমাম ও খতিব। তার মৃত্যু গোটা পরিবারকে গভীর দুঃখ ও আর্থিক সংকটে ফেলে দিয়েছে, কারণ তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন।
শহীদ মাহমুদুল হাসান মাহদী স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন এবং ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলের পর গাজীপুরে ফিরে যাওয়ার সময় পুলিশ গুলিতে গুরুতর আহত হন। তার বুকের বাম পাশে গুলি লাগে এবং অপারেশনের পরেও রক্তক্ষরণ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ৬ আগস্ট তিনি মারা যান।
মাহদীর মৃত্যুতে তার পরিবার অর্থাভাবে অসহায় হয়ে পড়েছে। তার বিধবা স্ত্রী, ৮ মাসের সন্তান ও অসুস্থ বাবা-মায়ের প্রতি অবস্থা অত্যন্ত কঠিন। তার পিতা, আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, তারা এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাননি। মাহদীর শহীদ হওয়ার পর তার পরিবার আর্থিক ও মানসিকভাবে দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে রয়েছে।
শহীদ মাহদী ছিলেন এক সুমধুর কণ্ঠের কুরআন তেলাওয়াতা, এবং রোজায় তার কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত শুনে সবাই মুগ্ধ হতো। তার সহায়তার জন্য তার মাদরাসার শিক্ষকরা সচ্ছল বিত্তবানদের কাছে বিনীতভাবে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন, যেন এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো যায়।
৫ আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরই সবাইকে দমে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফেসবুক লাইভ করেন মাহমুদুল হাসান মাহাদী। ওইদিন সকাল থেকেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছিলেন তিনি। স্বৈরাচার পতনের পর বিজয় উৎসবে যোগ দেন মাহাদী। এ সময় ঘাতকের বুলেট তার বুক ভেদ করে বেরিয়ে যায়। মাহমুদুলের বাবা মো. আবদুস সাত্তার জানান, ছেলের আয়েই সংসার চলতো। তিনি ইমামমতি করলেও অসুস্থতার কারণে এখন আর পারেন না। ঘরে স্ত্রীও অসুস্থ। দুই ছেলে এক মেয়ে লেখাপড়া করছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে এখনো মামলা করেননি বলেও জানান তিনি।
মাহদী সুমধুর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত: শহীদ মাহমুদুল হাসান মাহদী সুমধুর কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করতেন, উদিয়মান বক্তাও ছিলেন ,পেশ ইমাম এর দায়িত্ব ছিল তার। রোজায় তার সুমধুর তেল্ওায়াতে মুগ্ধ হত সবাই।
এ ধরনের ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জাতির জন্য যারা জীবন দিয়েছিলেন, তাদের পরিবারগুলোর জন্য আমাদের দায়িত্ব কখনোই শেষ হতে পারে না।