গাজী আরমানঃ- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সাংবাদিকতার পথচলা সহজ নয়। এই পেশার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সত্যকে আকড়ে ধরে মিথ্যার সঙ্গে লড়াই করা।
বুধবার (৫ মার্চ) খুলনা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, সত্যের পথে চলতে গেলে বাধা ও ঝুঁকি আসবেই। এজন্য সাংবাদিকতাকে অন্যতম কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে ভয়কে জয় করাই প্রকৃত সাংবাদিকদের দায়িত্ব। সততা ও নৈতিকতা বজায় রাখলে একজন সাংবাদিক কখনো হারিয়ে যায় না। সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিগুলোর মধ্যে সত্যনিষ্ঠতা ও পেশাদারিত্ব সবসময় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি ও অসত্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আজকাল অসৎ ও হলুদ সাংবাদিকতা প্রকৃত সাংবাদিকতার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে। সাংবাদিকতার মূল শক্তি হলো বস্তুনিষ্ঠতা। একটি প্রতিবেদকের তথ্য সংগ্রহের দক্ষতা যত ভালো, তার প্রতিবেদনও ততটাই গ্রহণযোগ্য হয়। অনুমাননির্ভর প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য নয়, একজন সাংবাদিককে সম্পূর্ণ সত্য উদঘাটনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
গণমাধ্যমের ভূমিকায় গুরুত্বারোপ
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের পাশাপাশি একটি শক্তিশালী গণমাধ্যমের উপস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। তবে, বর্তমান সময়ে গণমাধ্যম তার প্রকৃত ভূমিকা কতটা পালন করতে পারছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, অতীতের একটি সরকার সাংবাদিকতাকে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টা করেছে। কিছু সাংবাদিককে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের মাধ্যমে গণমাধ্যমের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে সেই আস্থা পুনরুদ্ধার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের কাজ সরকার, প্রশাসন ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করা। এটি কোনো পক্ষের প্রতিপক্ষ নয়, বরং জনস্বার্থ রক্ষায় একটি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করে। শক্তিশালী গণমাধ্যম ছাড়া রাষ্ট্র কখনোই সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারে না। যদি রাষ্ট্রের অন্য তিনটি স্তম্ভ দুর্বলও হয়, তবুও গণমাধ্যম শক্তিশালী থাকলে গণতন্ত্র টিকে থাকে। কিন্তু গণমাধ্যম দুর্বল হয়ে গেলে রাষ্ট্রও সংকটে পড়ে।