মেহেজাদ মুনিয়া;- সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক এবং উপস্থাপক ফারজানা রুপাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গঠিত একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স। বর্তমানে একাধিক মামলায় কারাগারে আটক ফারজানা রূপা, সাগর-রুনি হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিজুল হকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ মার্চ আদালত কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছেন।
এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিজুল হক ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে আবেদন করে ৪ মার্চ শুনানি শেষে আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। তবে, এখনও ফারজানা রূপাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি এবং শিগগিরই তা করা হবে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা।
উল্লেখযোগ্য যে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সময় ফারজানা রূপা এটিএন বাংলা টেলিভিশনে কর্মরত ছিলেন এবং তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এমনকি হত্যাকাণ্ডের পর তিনি টেলিভিশনে রিপোর্টও করেছিলেন। পুলিশ মনে করে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই হত্যার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের একটি ভাড়া বাসায় হত্যা করা হয় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। সাগর সরওয়ার ছিলেন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক এবং মেহেরুন রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর, হাই কোর্ট সাগর-রুনি হত্যার তদন্তের দায়িত্ব র্যাব থেকে সরিয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গঠিত একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সকে এই মামলার তদন্ত পরিচালনার নির্দেশ দেয়। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত আরও গভীরভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর, ২১ আগস্ট ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একাধিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ফারজানা রূপা এবং তার স্বামী, সাংবাদিক শাকিল আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যার অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে তারা বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে রয়েছেন এবং পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে।