প্রকাশ : ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫:২৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

এ সম্পর্কিত আরও খবর

হাসিনাকে ক্ষমা করার সুযোগ দেবে না বিএনপি: এ্যানি

প্রকাশ : ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫:২৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

👁 5 views

হাসিনাকে ক্ষমা করার সুযোগ দেবে না বিএনপি: এ্যানি


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,সময় বাংলার ।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, হাসিনা গুম-খুন, অত্যাচার-নির্যাতন লুটপাট করেছে। সেই হাসিনাকে ক্ষমা করার সুযোগ দেবে না বিএনপি।বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীপুর পৌর শহীদ স্মৃতি একাডেমির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

তিনি বলেন, অনেকে বলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দেবেন। ক্ষমা করার সুযোগ নেই। আমাদের বলে নিষিদ্ধ করেন না কেন? পথে-ঘাটে কি একটা দল নিষিদ্ধ করা যায়? যদি বিচার হয়, অটোমেটিক আমাদের এখন যে সেন্টিমেন্ট- তারা যে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে- তাতে হাসিনা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। তারপরও একটা নির্বাচন যদি হয়- পার্লামেন্টে বসে জনগণের মেন্ডেট নিয়ে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে অফিসিয়ালি নিষিদ্ধ করা- এটা আমাদেরও দাবি। এটা আমরা চাই। এ কারণে চাই- এ হাসিনা গুমের অর্ডার দিয়েছে, খুনের অর্ডার দিয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, লুটপাট করেছে। তাহলে হাসিনার বিচার হবে না, হাসিনাকে ক্ষমা করার সুযোগ করে দেব- এটা বাংলাদেশের মাটিতে বিএনপি দেবে না। আমরা দেব না। আমরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছিলাম। জেল খেটেছি। সুতরাং সবাইকে নিয়ে আমাদের নেক্সট টার্গেট এ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে। এ ওয়াদা ও টার্গেট নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।

এ্যানি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন হলে বিএনপি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেও আমরা এককভাবে দেশ চালাবো না। আমরা শুধু বিএনপির জন্য, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য আন্দোলন করিনি। জনগণের জন্য আন্দোলন করেছি, দেশের জন্য আন্দোলন করেছি, শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছি। নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

হাসিনা বলছে ‘পালাইনা’, কিন্তু পালায় গেছে। কী কারণে পালিয়েছে- উনি আপনার আমার টাকা লুটপাট করেছে। নির্বাচন তো করে নাই, জনগণকে জিম্মি করে এমপি বানিয়েছে, মন্ত্রী বানিয়েছে, মেয়র বানিয়েছে, গডফাদার বানিয়েছে। এটা ছিল তাদের শাসন, এ শাসন দেখতে চাইনি বলেই এদেশে ১৬ বছর আন্দোলন করেছি। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হাসিনা পালিয়েছে, যোগ করেন এ্যানি।

তিনি বলেন, আমরা যখন আন্দোলনের অংশ হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবকে বসিয়েছি, সুন্দরভাবে ভালো-মন্দ মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে দেশটা চলছিল। একটা স্বাভাবিক জীবনের মধ্যে দিয়ে তো আমরা আছি। হ্যাঁ আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। সংস্কার হবে, আলোচনা হবে, নির্বাচন হবে। কিন্তু এখন কি হচ্ছে- লিফলেট বিতরণ করছে, হরতাল দিচ্ছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে ভাষণ দিচ্ছে, বিন্দুমাত্র অনুশোচনা আছে? জনগণের কাছে বিন্দুমাত্র ক্ষমার জন্য হাত পেতেছে? ক্ষমা চেয়েছে? বরং হুংকার দিচ্ছে, আবার আসছি। তারা আবার আসবে, চট করে আসবে, ওপারে আছে, এপারে লাফ দেবে।

বাংলাদেশের স্বাভাবিক পরিবেশ আমরা আপনারা মিলে সৃষ্টি করেছি। মা-বাবারা বাচ্চাদের নিয়ে আন্দোলন করেছে, সে আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজে গুলি করে আমাদের ছাত্রকে হত্যা করেছে। তাহেরের (প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা) বাড়ি থেকে তার ছেলে গুলি করে নিরপরাধ আন্দোলনকারী ছাত্রদের হত্যা করেছে, যোগ করেন তিনি।

এ্যানি বলেন, এখন লিফলেট দিয়ে, বক্তব্য দিয়ে, হরতাল ঘোষণা দিয়ে, আবার কখন এসে অত্যাচারে নামবে, জাতিকে নতুন করে সে হুংকার দিচ্ছে। হাসিনা পালিয়ে গেছে, তার ষড়যন্ত্র পালায়নি, লুটপাটের টাকা পালায়নি, লুটের টাকা শেষ হয়নি। দেশ থেকে কি সবাই চলে গেছে? জায়গা-জমি রেখে গেছে। গতকাল যেটা দেখেছেন, সেটা সেন্টিমেন্ট, এটা সেন্টিমেন্টের বহিঃপ্রকাশ। এদেশের ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, হাসিনার বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে। এ সেন্টিমেন্ট গতকাল জাগ্রত হয়েছে।

এ্যানি বলেন, বিগত সরকার বইয়ের মধ্যে লিখেছে জয় বাংলা মুখস্ত করতে হবে, মুজিববাদী শাসন মুখস্থ করতে হবে, বঙ্গবন্ধু মুখস্থ করতে হবে। যে ছাত্রদের বানানোর জন্য এতো কিছু করলো, সে ছাত্ররা গেল কই। তার মানে জোর করে কিছু হয় না, হৃদয় লাগে। হৃদয়ে শেখ হাসিনার নাম থাকবে না। জোর করে শেখ হাসিনার নাম রাখা হয়েছিল। হৃদয়ে শেখ মুজিবের নাম থাকেনি। হৃদয়ে জিয়াউর রহমানের নাম এমনিতেই চলে আসে। যেহেতু তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা স্কুলে স্কুলে গিয়ে বা পাঠ্যবইয়ে বাধ্য করে কারও নাম লেখাইনি। স্কুলে গিয়ে জোর করে রাজনীতির কথা বলার কথা কখনো চিন্তা করিনি।

লক্ষ্মীপুর পৌর শহীদ স্মৃতি একাডেমি পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম লিটনের সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ দিদার হোসেন, লক্ষ্মীপুর বিআরডিবির চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও জেলা কৃষক দলের সহ-সভাপতি বদরুল ইসলাম শ্যামলসহ অনেকে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments