প্রকাশ : ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

এ সম্পর্কিত আরও খবর

রংপুরে “তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক” গণশুনানী

প্রকাশ : ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

👁 8 views

তিস্তা নিয়ে গণশুনানীতে দুই উপদেষ্টা


রংপুর করেসপন্ডেন্ট, সময় বাংলার ।

তিস্তা মহাপরিকল্পনায় কি থাকবে এটা ঠিক করবে তিস্তা পাড়ের মানুষ।চীনের ‘চায়না পাওয়ার কোম্পানীকে এমন শর্ত দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।রবিবার বিকেলে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার রেলসেতু সংলগ্ন তিস্তা নিয়ে গণশুনানিতে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ‘তিস্তা নিয়ে করনীয়’ শীর্ষক এ গণশুনানিতে উপস্থিত হল সরকারের আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ২০১৬ সালে চীনের সাথে একটি চুক্তির পর একটি মহাপরিকল্পনা দেয়া হয়। এই মহাপরিকল্পনা চীন সরকারের কাছে পাঠালে তারা দেখে যে এটি টেকসই হবে না। নতুন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের দুই বছরের সময় চেয়েছে চীন। কিন্তু তাদেরকে দুই শর্তে সময় দেয়া হয়েছে। একটি হলো-তিস্তা মহাপরিকল্পনায় কি থাকবে এটা ঠিক করবে তিস্তা পাড়ের মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে চীনের ‘চায়না পাওয়ার কোম্পানি’ নদী পাড়ের মানুষের কাছে মতামত শুনে চুড়ান্ত করবে। এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই মহাপরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করতে হবে বলেও শর্ত দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে নদীপাড়ের মানুষকে বাঁচাতে এ বছরের মার্চের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিস্তার ভাঙ্গন প্রবন ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে অতিভাঙন প্রবণ ২০ কিলোমিটার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত কাজ শুরু করবে।

গণশুনানীতে অংশ নেন তিস্তাবেষ্টিত ৫ জেলার কয়েক হাজার মানুষ। এসময় তারা সরকারের দুই উপদেষ্টার কাছে তাদের দূর্দশার কথা জানান

লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হামার হইছে কপাল পোড়া, হামার দুঃখ কেউ বোঝেনা। তিস্তার ভাঙ্গনে রাজপুর এখন ফকিরপুর হইছে। একনা চরোত যাও,হামার বাড়ীভাঙ্গা না দেখলে হামার দুঃখ বুঝবেন না। আগের সরকার কিছু করেনাই এবার আর হামাক ঠগান না বাহে’।

গণশুনানিতে বক্তব্য দেন এই এলাকার বাসিন্দা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও আখতার হোসেন। তিনি বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা শুধু কল্পনাতেই, কিন্ত বাস্তবে নেই। বর্ষা মৌসুমে তিস্তাপাড়ের মানুষের বাড়ী বারবার ভেঙ্গে যায়,তাদের কষ্ট আমরা জানি। ভারত তিস্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মামলা করে পানির ন্যয্য হিস্যা বুঝে নিতে হবে।

তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা বলেন,আওয়ামীলীগ সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনার নামে এই অঞ্চলের মানুষের সাথে বছরের পর বছর ধরে প্রতারণা করেছে। শুষ্ক মৌসুমে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তা শুকিয়ে মরুভুমি হয়। আবার বর্ষায় পানি প্রত্যাহারে ফেঁপে ফুলে উঠে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে ডুবিয়ে দেয় এ জনপদ। বাঁচামরার খেলা থেকে বাঁচতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।

স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন,তিস্তা চুক্তির খসড়া নিয়ে ২০১১ সাল থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ সরকার ভারত থেকে কিছু আদায় করতে পারেনি। তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছবি তুলেছে। তারা তিস্তার কথা বলতে পারেনি। কিন্ত অন্তবর্তী সরকার শিরদাড়া উঁচু করে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য অন্তবর্তী সরকার ভারতের সাথে নেগোশিয়েট করবে। আন্তর্জাতিকভাবে তাদের কুটনৈতিক চাপ দেয়া হবে যাতে তারা বাধ্য হয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষর করে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ রবিউল ফয়সালের সভাপতি গণশুনানিতে আরও বক্তব্য দেন,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ কে এম তারিকুল ইসলাম,জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ,বিএনপি নেতা এমদাদুল ভরসা,একেএম মমিনুল হক প্রমুখ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments