প্রকাশ : ১ মার্চ ২০২৫, ৮:০৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

এ সম্পর্কিত আরও খবর

কুষ্টিয়ায় রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনা: আঞ্জুমান মায়ার শরীরে উপসর্গ নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড?

প্রকাশ : ১ মার্চ ২০২৫, ৮:০৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

👁 8 views

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের কালোয়া এলাকায় একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। স্বামী আসিফ শেখের জন্মদিনে কেক কাটার পর রাতের অন্ধকারে নিখোঁজ হয়ে যায় ১৬ বছরের তরুণী আঞ্জুমান মায়া। পরদিন সকালে স্থানীয়রা পদ্মা নদীতে ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

প্রেমের বিয়ে, সুখী দাম্পত্য, কিন্তু শেষে মৃত্যু

আঞ্জুমান মায়া, আসিফ শেখের স্ত্রী, যিনি সবে সাত মাস আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। দাম্পত্য জীবনে সুখী ছিলেন বলে জানায় তাদের পারিবারিক সূত্র। শুক্রবার রাতে, আসিফের জন্মদিনে পারিবারিক ও স্বজনদের সঙ্গে কেক কেটে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন তারা। কিন্তু রাত ১টার দিকে আচমকা আঞ্জুমান মায়া ঘর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। খোঁজাখুঁজির পর শনিবার সকালে স্থানীয়রা তাঁর মরদেহ পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়।

রহস্য ঘনীভূত, অভিযোগ পাল্টে যায়

আঞ্জুমানের শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানান, আঞ্জুমান দীর্ঘদিন ধরে উপসর্গজনিত রোগে ভুগছিলেন, যা তাকে গভীর রাতে ঘর থেকে বের করে নদীতে ফেলে দেয়। তবে আঞ্জুমানের বাবার বাড়ির লোকজন অভিযোগ করেছে যে, আঞ্জুমানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছে তাঁর স্বামী, কারণ ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্যা ছিল।

শ্বশুরবাড়ির দাবি: উপসর্গ, না হত্যাকাণ্ড?

আঞ্জুমানের শাশুড়ি ফেরদৌসী খাতুন দাবি করেছেন, আঞ্জুমান নিয়মিত উপসর্গজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন, যা তাকে সস্তা উপায়ে নদীতে ফেলে দেয়। তিনি বলেন, “জন্মদিনের রাতে আমরা সবাই আনন্দে কাটিয়েছিলাম, তবে পরবর্তীতে আঞ্জুমান নিখোঁজ হয়। আমি বিশ্বাস করি, তাঁর উপসর্গই তাঁকে মেরে ফেলেছে।”

স্বামী আসিফের দাবি: দাম্পত্য জীবন ভালো ছিল

স্বামী আসিফ শেখ বলেছেন, “আমাদের দাম্পত্য জীবন একেবারে সুখী ছিল। রাতে জন্মদিনের উদযাপনে কেক কাটলাম, তারপর আঞ্জুমান ফোনে ব্যস্ত ছিল। পরবর্তীতে আমি জেগে দেখি, সে নিখোঁজ।” তিনি আঞ্জুমানের উপসর্গজনিত রোগের কথাও উল্লেখ করেছেন।

আঞ্জুমানের মা শোকাহত, দাবি করেছেন হত্যার বিচার

এদিকে, আঞ্জুমানের মা পারভীন খাতুন তার মেয়ের মৃত্যুতে শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে হত্যার শিকার হয়েছে। আসিফ আমার মেয়েকে ছলনায় ফাঁসিয়েছে এবং টাকা না পাওয়ায় তাকে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।”

ময়নাতদন্তের অপেক্ষা

কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার পুলিশ ও নৌপুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। কী ঘটেছে তা ময়নাতদন্তের পরই স্পষ্ট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন, কেননা আঞ্জুমানের মৃত্যু এক রহস্যময় ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments