প্রকাশ : ৫ মার্চ ২০২৫, ১২:২৫ এএম

অনলাইন সংস্করণ

এ সম্পর্কিত আরও খবর

রমজান মাসে অপরাধ মোকাবিলায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

প্রকাশ : ৫ মার্চ ২০২৫, ১২:২৫ এএম

অনলাইন সংস্করণ

👁 11 views

রমজান মাসে রোজা, ঈদ কেনাকাটা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ঘিরে পেশাদার ও মৌসুমি অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। জাল টাকার কারবার, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরি, অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টির তৎপরতা ইতিমধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অপরাধ মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পূর্বের ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, রমজান মাসে কিছু অপরাধের আশঙ্কা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ডাকাতি, চাঁদাবাজি এবং জাল টাকার কারবার। এসব অপরাধ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় যৌথ বাহিনী ১১ হাজার ৮৮২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এখন থেকে অভিযানের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন না হওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

রমজান মাসে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানুষের বেড়ে যাওয়া তৎপরতার কারণে অপরাধীরা জনসমাগমের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অপরাধ করে থাকে। বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়ি চুরি, ছিনতাই, ও ব্যাংক লেনদেনে জাল নোট চালানো সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। এসব অপরাধ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

পুলিশ এবং যৌথ বাহিনীর  অভিযান  টহল দল সারা দেশে অভিযানে অংশগ্রহণ করছে। বিশেষ নজরদারি এবং সাদাপোশাকের বাহিনী বিপণিবিতান, বাজার এবং জনসমাগমস্থলে দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া, অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং নগদ অর্থ পরিবহনের জন্য বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

রমজান মাসের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও কঠোর করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ৫৭৫টি টহল দল রাজধানীজুড়ে নিয়োজিত ছিল এবং ৬৫টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে ১৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৬ জন ডাকাত, ১৮ জন পেশাদার ছিনতাইকারী, ৪ জন চাঁদাবাজ এবং ১০ জন চোর রয়েছে।

ডিএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ডিএমপি এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া, ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, ডিএমপির টহল টিমের পাশাপাশি মহানগরীর বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় বিশেষায়িত ইউনিটগুলোও কাজ করছে। ২৪ ঘণ্টায় সিটিটিসি, এটিইউ এবং র্যাবের যৌথ টহল অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ ছাড়া, পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএন ২০টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করেছে।

নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ডিএমপির পুলিশ সদস্য, বিজিবি, আনসার ও কোস্টগার্ডের সদস্যদের জন্য মোটরসাইকেল কেনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে অলিগলি এলাকায় দ্রুত টহল দেওয়া সম্ভব হয়। এছাড়া, ছিনতাইকারী, ডাকাত, কিশোর গ্যাংসহ অপরাধীদের ধরতে সমন্বিত অভিযান চালানো হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোর কমিটির সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় বলা হয়, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার ও কোস্টগার্ডের সদস্যদের সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় বিশেষ টহল বৃদ্ধি করা হবে। সরকার মিথ্যা, গুজব এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সত্য তথ্য প্রচারের পদক্ষেপ নেবে।

এছাড়া, বিশেষ নজরদারি করা হবে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে মামলার তদন্তের উপর, যাতে প্রকৃত অপরাধীরা দ্রুত আইনের আওতায় আসতে পারে। রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রমজান মাসব্যাপী চলবে, যাতে জনসাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে ইবাদত ও কেনাকাটা করতে পারে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments