প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৫, ৫:২২ এএম

অনলাইন সংস্করণ

এ সম্পর্কিত আরও খবর

রোজায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৫, ৫:২২ এএম

অনলাইন সংস্করণ

👁 8 views

রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধির এবং সংযমের মাস, যেখানে এক মাস ধরে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য ও পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। তবে, এই পবিত্র মাসে অনেকের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু মানুষ রোজার সময়ে অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে ওজন বাড়িয়ে ফেলেন, আবার কিছু মানুষ দীর্ঘক্ষণ খাবার ও পানি থেকে বিরত থাকার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই রমজান মাসে সুস্থ থাকার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

রমজানে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস:

১. সঠিক সময় এবং পরিমাণে খাবার গ্রহণ: রমজান মাসে ইফতার এবং সেহরির মধ্যে খাবারের পরিমাণ ও ধরন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেহরি সময়ে এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত যা শরীরকে সারাদিন সতেজ রাখবে এবং শক্তি দেবে। শাকসবজি, ফলমূল, পূর্ণ শস্যের খাবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডাল, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি গ্রহণ করা উচিত।

ইফতার সময়ে অতিরিক্ত তেল, মিষ্টি এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা উচিত। ইফতারে আগে পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন, যাতে শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় থাকে। এরপর এক বা দুটি হালকা খাবার খাওয়া যেতে পারে, যেমন স্যুপ, সালাদ, বা ছোট পরিমাণে ভাজা খাবার।

২. মিষ্টির প্রতি নিয়ন্ত্রণ: রমজান মাসে অনেকেই অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খেতে পছন্দ করেন, বিশেষ করে ইফতার সময়ে। তবে এসব খাবার অতিরিক্ত ক্যালোরি এবং চিনি যুক্ত হওয়ায় শরীরের ওজন বাড়ানোর প্রধান কারণ হতে পারে। তাই মিষ্টি খাবারের পরিমাণ সীমিত রাখা উচিত।

৩. সেহরি এবং ইফতারে পানি গ্রহণ: শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। সেহরি এবং ইফতার উভয় সময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন, তবে একে একে খুব বেশি পানি পান না করে একটু একটু করে পান করুন, যাতে শরীর সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকে।

নিয়মিত শরীরচর্চা বজায় রাখা:

১. হালকা ব্যায়াম: রমজান মাসে শরীরচর্চা অবহেলা করা উচিত নয়। তবে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শরীর দুর্বল হতে পারে, তাই হালকা ব্যায়াম করা উচিত। রোজা ভাঙার পর, ইফতারের আগে হালকা হাঁটাহাঁটি বা যোগব্যায়াম করতে পারেন। এতে শরীরের শক্তি বজায় থাকবে এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করবে।

২. ইফতার পরেও ব্যায়াম: ইফতার করার পর অন্তত ৩০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে, তারপর আপনি হালকা ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। দৌড়ানো বা ভারী ব্যায়াম না করলেও, কিছু যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।

৩. শারীরিক সুস্থতা এবং বিশ্রাম: রোজার কারণে বিশ্রামের অভাব হতে পারে, তবে পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীর যদি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পায়, তবে তা অতিরিক্ত খাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই রাতের ঘুমের পরিমাণ কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা হতে হবে।

রমজান মাসটি শুধুমাত্র আত্মশুদ্ধি এবং সংযমের মাস নয়, এটি আমাদের শারীরিক সুস্থতার প্রতি সচেতন হওয়ার একটি সুযোগও। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পানের পাশাপাশি নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করার মাধ্যমে রমজানে সুস্থ থাকা সম্ভব। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, নিজেকে অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা, যাতে এই পবিত্র মাসে শরীরও সুস্থ থাকে এবং মনও শান্ত থাকে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments